
গাজী মমিন, ফরিদগঞ্জ :
জ্বলছে কাট, উড়ছে কালো ধোঁয়া, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। উজাড় হচ্ছে বনজ ও ওষধিসহ বিভিন্ন সবুজ বৃক্ষ। লুটপাট হচ্ছে টপসয়েল, বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের গাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজ এলাকায় বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে গড়ে উঠা অবৈধ ইটভাটার নির্গত কালো ধোঁয়া দূষিত করছে চারপাশের পরিবেশ। পরিবেশ দূষণের ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরাসহ স্থানীয় নারী-শিশুসহ অধিকাংশ মানুষ।
উপজেলায় প্রায় ৩০ টি ইটভাটা রয়েছে। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন আবাদি জমি, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার পাশে গড়ে উঠেছে ইটভাটা গুলো। এসব ভাটায় কয়লার পরিবর্তে ব্যবহত হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের গাছ। ফলদ, বনজ ও ওষধি গছের কাঠ পুড়িয়ে অবাধে তৈরি করা হচ্ছে ইট। একই সাথে কৃষি জমি থেকে টপসয়েল কেটে ব্যবহার করা হচ্ছে ইট তৈরীর কাজ।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী কৃষি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ঘনবসতি এলাকায় ভাটা স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু এই নিয়মনীতি উপেক্ষা করে উপজেলার গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের পাশে চলছে অবৈধ ইটভাটা। ইট তৈরির মাটিও সংগ্রহ করা হচ্ছে কৃষি জমি থেকে। এছাড়া ভাটায় গাছ পোড়ানোর ফলে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে পড়ছে কৃষিখাত। ভাটায় আবার ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে ৮ থেকে ১০ বছরের শিশু শ্রমিক। অন্যদিকে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতিনিয়ত কাঠ কেটে ইটভাটায় নিয়ে আসার ফলে গ্রামে দিন দিন কমে যাচ্ছে গাছপালা। এতে পরিবেশ হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে। ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ছে গ্রামের হাজার হাজার লোকজন। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করলেও নিয়ম মানছে না ভাটা মালিকরা।
পরিবেশ অধিদপ্তর চাঁদপুর’র উপ পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ভাটা গুলোর খোঁজখবর নিচ্ছি। নিয়মনীতির বিরুদ্ধে যাওয়া সকল ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেটু কুমার বড়ুয়া বলেন, ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে গাছ বা কাঠ ব্যবহার করা অপরাধ। আমরা অভিযান পরিচালনা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মন্তব্য করুন