
গাজী মমিন,ফরিদগঞ্জ ঃ ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভয়াবহ চিকিৎসক সংকটের মুখে। একটি পৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়নের উপজেলাটিতে প্রায় ছয় লাখ মানুষের বসবাস। বিশাল এ জনগোষ্টির চিকিৎসা সেবার এ হাসপাতালটিতে শয্যানুযায়ী ৫০ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ছয়জন। এর মধ্যে তিনজন ডাক্তারের কর্মস্থল হচ্ছে উপজেলা তিনটি সাব-সেন্টারে। ফলে, মাত্র তিনজন ডাক্তার জোড়াতালি দিয়ে চালাচ্ছেন উপজেলার প্রায় ছয় লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা। ৫০ শয্যা হাসপাতাল কাগজপত্রে অনুমোদন পেলেও বাস্তবে সেই আগের ৩১ শয্যার মতোই চলছে এ সরকারি হাসপাতালটি।
জানা গেছে, ষাটের দশকে স্থাপিত হাসপাতালটি ২০২১ সালে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। অবকাঠামোগত উন্নয়নও হয়েছে। সে অনুযায়ী বর্ধিত জনবল কাঠামো অনুমোদন না হওয়ায় চিকিৎসাসেবা আগের মতোই রয়ে গেছে। ফলে উপজেলার ছয় লক্ষাধিক মানুষের সেবা দিতে গিয়ে অতিরিক্ত চাপে পড়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, বহির্বিভাগে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। এছাড়া জরুরি বিভাগে প্রায় একশ এবং অন্তর্বিভাগে ৭৫ থেকে ৮৫ জন রোগী সেবানেয়। ভর্তি রোগীর চাপ থাকায় অনেকে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নেয়।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী আলতাফ বানু (৫০), সোহেল মিজি (৪০)সহ আরো বেশ কয়েকজন বলেন, অনেক দূর থেকে বড় ডাক্তার দেখাতে হাসপাতালে আসছি। কিন্তু পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় আমরা ঠিকমত সেবা পাচ্ছিনা। এত উন্নত হাসপাতাল করে কিলাভ? যদি ডাক্তার না থাকে।
এ নিয়ে কথা হলে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মুজাম্মেল হোসেন বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। ফলে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য সেবাদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা না পাওয়ার দায় এসে পড়ে চিকিৎসকদের ঘাড়ে। তারপরও রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। এ হাসপাতালে বর্তমানে ছয়জন ডাক্তার থাকলেও তাদের মধ্যে তিনজন হচ্ছেন সাব-সেন্টারের।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্তকর্তা আসাদুজ্জামান জুয়েল জানান, বর্তমানে ৩১ শয্যার হাসপাতালের কাঠামো অনুযায়ী কমপক্ষে ২০ জন ডাক্তার থাকার কথা, সেখানে আমি মাত্র ছয়জন ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল চালাচ্ছি।
মন্তব্য করুন