
ফরিদগঞ্জে মা জুয়েলার্সে চুরির ঘটনায় আসামীদের গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং করছেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আব্দুর রকিব পিপিএম । গ্রেফতারকৃত চোর চক্রের দুই সদস্য উদ্ধারকৃত সোনার গহনাসহ অন্যাণ মালামাল।
গাজী মমিন, ফরিদগঞ্জ ঃ ফরিদগঞ্জে ‘মা জুয়েলার্স’ নামক দোকানে স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় মূল আসামি কামাল পারভেজ মিলন (৪৬) ও অপর আসামি মো. খলিল মৃধাকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৭ ভরি সোনা ও নগদ ৫ লাখ টাকাসহ চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) মো. লুৎফুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার মুকুর চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেফতার আসামি পারভেজ সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার ফিরোজপুর গ্রামের ইসমাইল সরদারের ছেলে। তিনি বাস করেন খুলনা সদরের নিরালা আবাসিক এলাকায়।
অপর আসামি খলিল পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি থানার দক্ষিণ ইন্দুরকানি গ্রামের নেছার উদ্দিন মৃধার ছেলে। তিনি থাকেন চাঁদপুর সদরের এনায়েতনগর শেখের হাট আশ্রয় বাড়িতে।
ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, ১৫ অক্টোবর দিবাগত রাতে বাজারের থানা মোড় এলাকার মন্টু কর্মকারের মা জুয়েলার্সে চুরি হয়। চোর চক্র তাঁর দোকানের ক্যাশ বাক্সের তালা ভেঙে নগদ প্রায় ২৫ হাজার টাকা ও দোকানের ভেতরে থাকা সিন্দুকের তালা ভেঙে ২৪ ভরি ৯ আনা সোনা, যার আনুমানিক মূল্য ৫০ লাখ টাকা এবং ৩৫ ভরি রুপা, যার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ৫ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।
এই ঘটনায় ব্যবসায়ী মন্টু কর্মকার ২২ অক্টোবর ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান। তিনি প্রথমে মূল আসামি পারভেজকে ২৯ অক্টোবর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে খুলনা শহরের নিউমার্কেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে, থানার অপর একটি টিম সদর উপজেলার এনায়েতনগর থেকে একই দিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে খলিলকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ আব্দুর রকিব বলেন, পারভেজের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর ভাড়া বাসা থেকে ৭ ভরি ১ আনা ১ রত্তি স্বর্ণালংকারসহ দুটি মোবাইল ফোন এবং চোরাই কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পারভেজ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, চুরি করে নেওয়া স্বর্ণালংকারের মধ্যে ১২ ভরি স্বর্ণালংকার বিভিন্ন জায়গায় ১৩ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন এবং ওই টাকা থেকে তাঁর সহযোগী খলিল মৃধাকে ৫ লাখ টাকা দেন। খলিলের কাছ থেকে পুলিশ ওই ৫ লাখ টাকা উদ্ধার করে। বাকি ৫ ভরি সোনা উদ্ধার ও জড়িতদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘কামাল পারভেজ মিলন আন্তজেলা চোর চক্রের মূল হোতা। সে তার সহযোগী অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় স্বর্ণালংকারের দোকানে কৌশলে চুরি করে আসছে। তার বিরুদ্ধে ৭টি মামলা এবং খলিল মৃধার বিরুদ্ধে দুটি সিআর মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদেরকে আজই চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করা হবে।