শামসুজ্জামান ডলার, মতলব উত্তর ঃ ৪ অক্টোবর শনিবার থেকে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর বৃহত্তর অঞ্চলে চলছে ২২ দিনের ইলিশসহ সবধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞায় এই উপজেলার ষাটনল থেকে আমিরাবাদ পর্যন্ত সীমানা ২৫ কিলোমিটার। নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনেই উপজেলা মৎস্য বিভাগ মাঠে ছিলেন অনুপস্থিত।
বেলা ২ টার দিকে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিঃ দায়িত্ব) শামীম আহমেদ এর সাথে মুঠফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি জেলা সদর চাঁদপুরে সচেতনতামূলক সভায় আছি। তবে মতলব উত্তর উপজেলায় তাঁর জনবল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, অফিসে একজন অফিস সহায়ক ও একজন অফিস সহকারী আছেন।
তবে সন্ধ্যার পরেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিঃ দায়িত্ব) মতলব উত্তর উপজেলায় আসেননি। ৯ হাজার ২২ জেলের মেঘনা পাড়ের এই উপজেলায় মা ইলিশ সহ সকল মাছ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনে উপজেলা মৎস্য বিভাগের মাঠে না থাকার বিষয়ে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরী বিষয়টি সত্যিই হতাশার বলে মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য, মতলব উত্তর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস ছুটিতে ভারতে গেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কর্মকর্তা কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় অফিস সহায়ক আরিফ হোসেন অলসভাবে দিন কাটালেও প্রকল্পের চুক্তিভিত্তিক অফিস সহকারী ইমাম হোসেন স্থানীয় জেলে প্রতিনিধি হওয়ায় জেলে প্রতিনিধি হিসেবে ষাটনল ইউনিয়ন পরিষদে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণে উপস্থিত থেকে দিন কাটিয়েছেন।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুলসুম মনি আছেন ঢাকায়। তাই মুঠফোনে কথা হলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রহমত উল্ল্যাহ জানান, আজকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেঘনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় কোনো অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। তবে কাল থেকে অভিযান পরিচালনা করার আশা রাখছি।
মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনায় ইলিশের প্রজনন কেন্দ্র খ্যাত ষাটনল থেকে বাবুবাজার, ছটাকি, দশানি, মোহনপুর, একলাশপুর, জহিরাবাদ হয়ে আমিরাবাদ পর্যন্ত দীর্ঘ্য এই ২৫ কিলোমিটার অঞ্চলে ইলিশ সহ সকল মাছ ধরার উপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
মেঘনা পাড়ের বেশ কয়েকজন জেলে, স্থানীয় বিভিন্ন দোকানদার সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলায় তালিকাভুক্ত ৯ হাজারেরও অধিক জেলে ও ১৪ ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভার এই উপজেলায় শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে ষাটনলে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন এর উপস্থিতিতে সচেতনতামূলক যে সভাটি হয়েছে এত ব্যাপক সংখ্যক জেলে ও বিশাল উপজেলার ব্যাপক এই অঞ্চলে এটিই একমাত্র সচেতনতামূলক সভা। উপজেলার আর কোথাও সচেতনতা মূলক কোন সভা বা অন্য কেন ধরনের প্রচার-প্রচারণা হয়নি।
উপজেলার অধিকাংশ জেলে লেখাপড়া না জানলেও মেঘনা পাড়ের কিছু অঞ্চলে মা ইলিশ না ধরা, ধরলে শাস্তি, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা সহ বেশ কিছু তথ্য ও নির্দেশনার লেখা সম্বলিত ব্যানার সাটানো অবস্থায় আছে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।